ভেষজ গাছ উলটকম্বলের উপকারিতা

ভেষজ গাছ উলটকম্বলের উপকারিতা 

উলট কম্বল আমাদের দেশে উৎপাদিত ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থান, শ্রীলঙ্কার অঞ্চল জুড়ে এর বিস্তৃতি রয়েছে। এছাড়া এশিয়ার প্রধান অঞ্চল এর আদি নিবাস। বাংলাদেশের সর্বত্র এ গাছ জন্মাতে দেখো যায়। উলট কম্বল ২-৩ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট গুল্ম জাতীয় চিরহরিত গাছ। এ গাছের শাখার গোড়ার পাতা হৃদপিন্ডের মতো দেখায়, তবে পাতার অগ্রভাগের দিকটা সরু, রঙ উজ্জ্বল সবুজ। পাতার বোটা ও কচি ডাল খয়েরি লাল, ডগার পাতাগুলি লম্বা আকৃতির হয়ে থাকে। গাছের বাকল শক্ত আঁশ যুক্ত, পানিতে ভিজালেও নষ্ট হয় না। গাছের কাঠ নরম ও ধুসুর বর্ণের। নির্দিষ্ট বয়সে এ গাছে ফুল ফুটে, ফুলের রঙ খয়েরী, পাঁপড়ি পাঁচটি, গাছের কচি অগ্র শাখায় ফুল ফুটে। ফুল দেখতে বেশ মনোরম, গ্রীষ্মকাল থেকে ফুল ফুটা শুরু হয়ে শরৎকাল পর্যন্ত ফুল ফুটে এবং শীতকাল পর্যন্ত গাছে ফুল থাকে। ফুল শেষে গাছে ফল হয়, পঞ্চকোণাকৃতি আকারের ফল, প্রথমে সবুজ রঙ এবং পরবর্তীতে পরিপক্ক ফল কালো রঙ ধারণ করে। পরিপক্ক ফল আপনা আপনি ফেটে যায়, ফলের ভিতর কম্বলের ন্যায় লোমশ থাকে ও পাঁচটি প্রকোষ্ঠে কালো জিরার মতো ছোট-ছোট বীজথাকে।                                                                                                  
 উলট কম্বলের ঔষধী গুণাগুণ:
গাছের পাতা, ডাল ও মূলের ছাল বিভিন্ন রোগের ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গাছের ছাল ও ডাটা পানিতে ভিজিয়ে কচলালে বিজলের মতো পদার্থ বের হয়। মূলের ছাল ঋতু¯্রাব বৃদ্ধিকারক ও নিয়ন্ত্রনকারী, তাছাড়া অনিয়মিত বা অধিক¯্রাব নিয়ন্ত্রনে, জরায়ু স্থানচ্যুতিতে ব্যবহৃত হয়। পাতার ডাটা প্র¯্রারে জ¦ালাপোড়া, আমাশয় রোগের জন্য উপকারী এবং পাতা ও কান্ডের রস গণোরিয়া, স্ত্রী রোগে বেশ উপকারী। গবাদি পশুর পাতলা পায়খানা, বিলম্ব প্রজনন, জরায়ুর রক্তক্ষরণ এবং হাঁস-মুরগির নানা প্রকার চিকিৎসায় উলট কম্বল ব্যবহৃতহয়েথাকে।                                                                                                  মাটি ও জলবায়ু:
সাধারণত সবধরনের সুনিষ্কাশিত মাটিতে উলট কম্বল জন্মায়। তবে দোআঁশ মটিতে এ গাছ ভালো জন্মে। এ গাছ ছায়া সহ্য করতে পারে এবং ছায়াতে বেশি ভাল হয়। পাহাড়ী বনাঞ্চলের পাশা-পাশি গ্রাম, শহর,বিভিন্নপারিবারিকবাগান,রাস্তারধার,ভেষজবাগানএবংবিভিন্ন প্রতিষ্টানের বাগানে উলটকম্বল গাছ জন্মাতে দেখা যায়।                                                                     
 উৎপাদন ব্যবস্থাপনা:
উলট কম্বল বীজ থেকে ও ডাল কাটিং এর মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা যায়। তবে বীজ থেকে বংশ বিস্তার খুবই সহজ পদ্ধতি। বীজ সংগ্রহ পরবর্তী ১-২ মাস পর বীজ বপন করা যায়। বীজ বপনের পূর্বে ২ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে পানি ছেকে বাতাসে শুকিয়ে নিয়ে প্রস্তুতকৃত জমিতে বীজ ছিটিয়ে বা সারিতে বপন করা যায়। বীজ বপন পরবর্তী জমি মই দিয়ে সমান করতে হবে ও বীজ ভালভাবে ডেকে দিতে হবে। জমিতে অক্টোবর-নভেম্বর মাস বীজ বপনের উত্তম সময়। এ সময় বীজ বপনে ভালো চারাও গাছ পাওয়া সম্ভব।                                                                            
সার ব্যবস্থাপনা:
উলট কম্বল গাছে তেমন সার প্রয়োগ করতে হয় না। প্রয়োজনে জমি কম উর্বর হলে অল্প পরিমান সার দিতে হয়, বিঘা প্রতি ৫ কোজ এমওপি ও ১০ কেজি টিএসপি দরকার হয়। শুকনো মৌসুমে সেচের প্রয়োজন হলে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। আগাছা দমন করতে হবে।  
Share:

No comments:

Post a Comment

Popular Posts

Blog Archive

Powered by Blogger.

Blog Archive

Unordered List

  • Lorem ipsum dolor sit amet, consectetuer adipiscing elit.
  • Aliquam tincidunt mauris eu risus.
  • Vestibulum auctor dapibus neque.

Theme Support

Need our help to upload or customize this blogger template? Contact me with details about the theme customization you need.