কমলার কিছু উপকারিতা
কমলা কেবল সুস্বাদু রসালো ফলই নয়, এর মধ্যে আছে অনেক স্বাস্থ্যকর গুণ। কমলার রসের মধ্যে রয়েছে মিনারেল, ফ্লেবোনয়েড, ভিটামিন সি ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কমলার রসের কিছু গুণের কথা জানিয়েছে জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই।১. হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায় : কমলার রসের মধ্যে থাকা উপাদান হার্টের নালিকে ভালো রাখে। এতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।
২. রক্তের চাপ ভালো রাখে : কমলার রসের মধ্যে থাকা উচ্চ পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ ঠিকঠাক রাখতে কাজ করে। ম্যাগনেসিয়াম উচ্চ রক্তচাপকে স্বাভাবিক মাত্রায় আনতে সাহায্য করে।
৩. নিরাময় করে : কমলার মধ্যে রয়েছে প্রদাহরোধী উপাদান। এটি আর্থ্রাইটিস কমাতে কাজ করে ও ব্যথা কমায়।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : কমলার জুসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি। এটি ফ্লু ও ঠান্ডা প্রতিরোধে কাজ করে।
৫. আলসারের চিকিৎসায় : কমলার রস হজম ভালো করে আলসার কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া নিয়মিত কমলার রস খাওয়া কিডনির পাথর প্রতিরোধে কাজ করে।
৬. ত্বক ভালো রাখে : কমলার রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ভালো রাখে এবং ত্বক তারুণ্যদীপ্ত করতে সাহায্য করে।
৭. ওজন কমায় : কমলার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ওজন কমায়। তাই যাঁরা ওজন কমাতে চান, নিয়মিত খাদ্যতালিকায় কমলার রস রাখতে পারেন।
কমলার খোসার উপকারিতা
কমলালেবু খাওয়ার পর সাধারণত আমরা এর খোসা ফেলে দেই। বাচ্চাদের এই খোসা দিয়ে একটি মজার খেলা আছে। তারা কান্নার অভিনয়ের জন্য কমলার খোসা একজন অন্যজনের চোখে চিপে দেয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এই কমলার খোসা পুষ্টিগুনে আপেলের খোসারই মত উপকারি। বরঞ্চ কমলার খোসা একটু বেশিই গুনাগুন সম্পন্ন।দ্য নিউ হোল ফুডস এনসাইক্লোপিডিয়া লেখিকা রেবেকা উডসের মতে, একটি মাঝারি আকৃতির কমলায় রয়েছে প্রায় ৬০টি ফ্লেভোনয়েডস ও ১৭০টি বিভিন্ন ধরনের ফাইটোনিউট্রিএন্টস যা মানুষের ত্বক, পুরো শরীরের যত্নে কাজে লাগে। এমনটি হাজারো কাজে কমলার খোসা আমাদের কাজে লাগে। অথচ আমরা না জেনেই এত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন কমলার খোসা অপচয় করি।
চিকিৎসায় কমলার খোসা যেভাবে কাজে লাগাবেন –
১. কফ ও পিত্তের সমস্যায়: কমলার খোসার রসের অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হলো এটি কফের সমস্যা ও পিত্তের যে কোন ধরনের সমস্যা দূর করে। প্রথমে কমলার খোসা পাতলা করে ছিলে নিন। এরপর ভেজিটেবল পিলারের সাহায্যে কিংবা গ্রেটারে ঘষে নিন। পরে খোসার কুচিগুলো রঙ চা তৈরির সময়েই ঢেলে দিন। সাথে অল্প পরিমাণে আদা দিলে আরও ভাল হয়। এবার পানি একটু ফুটিয়ে আদা ও কমলার গন্ধ ছড়ালেই চায়ের মতো পান করুন। সাথে দিতে পারেন মধুও। তাহলে কফ ও পিত্ত সমস্যার অবশ্যই সমাধান হবে।
২. পেটের সমস্যায়: কমলালেবুর খোসা পেটের সমস্যার সমাধান করে। এমনকি গ্যাস, অ্যাসিটিডি ও বমি বমি ভাব দূর করতেও কমলার খোসার জুড়ি নেই। প্রতিদিন সকালে খোসার মিহি কুচি এক চা চামচ পরিমাণ মধুর সাথে খেয়ে নিন। তাহলে এ ধরনের সমস্যায় আর সহজে পড়বেন না। এমনকি সকালের নাস্তায় সালাদের সাথেও এটি খেতে পারেন।
৩. ওজন কমাতে : উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরলের সমস্যা ও ওজন কমানোর জন্য কমলার খোসা অনেক বেশি কার্যকরী। কারণ এতে ট্রাইগ্লিসারাইড দ্রবীভূত থাকে যেটি সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে।
৪. অনিদ্রা দূর করতে : কমলার খোসা মিশ্রত পানি গোসলের সময় ব্যবহার করলে এটি অনিদ্রা দূর করে। এমনকি কুসুম গরম পানিতে এর খোসা ফেলেও গোসল করা যায়। তবে চাইলে পানির সাথে খোসার তেল মিশিয়ে নিতে পারেন।
৫. ক্যান্সার ও হাড়ের রোগ প্রতিরোধে : কমলার খোসায় ফ্লেভোনয়েড রয়েছে যা ‘হেস্পিরিডিন’ নামে পরিচিত। এটি কোলন ক্যান্সার এবং অস্টিওপরোসিস বিরুদ্ধে কাজ করে আমাদের রক্ষা করে।
৬. অ্যাজমা ও কাশির সমস্যায় : কমলার খোসার গুঁড়ো কাশির সমস্যা দূর করে। এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ও অ্যাজমা উপশমে এটি কাজে লাগে। এসব কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে কমলার খোসায় তৈরি চা নিয়মিত পান করুন। আবার কমলার খোসা দিয়ে মোরব্বা বা টফিও তৈরি করে রাখা যায়। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে এই টফি চা পানের সময় ভালো করে চিবিয়ে খান। তাহলে রোগমুক্তি ঘটবে।
৭. অ্যাসিডিটি দূর করতে : কমলার খোসার তেলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি রয়েছে যা পেটের অ্যাসিডিটি দূরীকরণে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে ডি-লিমোনেন নামের একটি উপাদান আছে যা অন্ত্র ও লিভার ফাংশনকে স্বাভাবিক রাখে। আর এর তেল পানিতে দু’ফোঁটা মিশিয়ে পান করলে অ্যাসিডির সমস্যা একেবারেই চলে যাবে।
No comments:
Post a Comment