সন্তানের দাঁতের ব্যাপারে বাবা-মা যে ভুলগুলো করে থাকেন

সন্তানের দাঁতের ব্যাপারে বাবা-মা যে ভুলগুলো করে থাকেন

পিতামাতাই চান তাদের সন্তান সুস্থ-সবল ও নিরাপদ থাকুক।শিশুর মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ছোটবেলা থেকেই অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়।আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন এর মতে, ২ থেকে ১১ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে ৪২% এর দুধ দাঁতে ছিদ্র থাকে, ৬ থেকে ১১ বছরের ২১% বাচ্চার স্থায়ী দাঁতে ছিদ্র থাকে। অবাক করার মত বিষয় হল সন্তানের কিছু খারাপ অভ্যাস বিকশিত হওয়ার পেছনে বাবা-মা ই দায়ী থাকেন। বাবা মায়ের কিছু সাধারণ ভুলের কারণে শিশুর দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। আপনিও কি এই ভুলগুলো করছেন?আসুন জেনে নেই সেই ভুল গুলো সম্মন্ধে।

১। শিশুকে একা একা ব্রাশ করতে দেয়া : ৮ বছরের কম বয়সের শিশুদের একা একা ব্রাশ করতে দেয়া ঠিক না। এই সময় তাদের সাহায্যের প্রয়োজন। এই বয়সে ভালো ভাবে দাঁত পরিস্কার করার মত দক্ষতা তাদের তৈরি হয় না। বাবা মায়ের উচিত দাঁত ব্রাশ করার সময় তাদের সাথে থেকে দেখিয়ে দেয়া যেন সব দাঁত ঠিক মত পরিষ্কার হয়।
২। শিশুকে ফিডার বা বোতল দিয়ে খাওয়ানো : শিশুকে শুয়ে শুয়ে বোতল দিয়ে খেতে দিলে তাঁর মুখে চিনি ও ব্যাকটেরিয়া লেভেল বেড়ে যায়, যা দাঁত ক্ষয় এর সৃষ্টি করতে পারে। একেবারে ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে ফিডার খাওয়া শেষে তার দাঁত ও মাড়ি ভেজা কাপড় দিয়ে মুছিয়ে দিন আর তার চেয়ে বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পান করার পর ঘুমাতে যাওয়ার আগে দাঁত ব্রাশ করে ভালো করে কুলি করাতে হবে।
৩। ক্যাভেটি কোন ব্যাপার না : আপনি হয়তো চিন্তা করছেন দাঁতে ছিদ্র হলে ঠিক করে ফেলা যায়, তাই এটা তেমন গুরুত্ব পূর্ণ কোন ব্যাপার না। কিন্তু এটা ভাবা ঠিক নয়, কারণ ছোট বেলায় ক্যাভিটি দেখা দিলে তাঁর সারা জীবনের উপর ই প্রভাব ফেলবে। দুধ দাঁত ভালো থাকা প্রয়োজন কারণ তাঁরাই স্থায়ী দাঁতের জন্য জায়গা তৈরি করে রাখে। দুধ দাঁত মাড়িকে গাইড করে যার ফলে স্থায়ী দাঁত তৈরি হতে পারে। Banker এর মতে ছোট বেলায় যদি দাঁতে ছিদ্র তৈরি হয় এবং এর চিকিৎসা যদি না করা হয় তাহলে বাচ্চার স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে সমস্যা হতে পারে, ঘুম কমে যেতে পারে এমনকি তার আত্মবিশ্বাস কমে যেয়ে স্কুলের পারফরমেন্স খারাপ হতে পারে।
৪। ফ্লোরাইড ব্যবহার না করা : ফ্লোরাইড দাঁতের ছিদ্র হওয়া রোধ করে। তাই ২ বছর বয়স থেকেই ফ্লোরাইড যুক্ত পানি ও টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে।
৫। ড্রিঙ্ক খেতে দেয়া : দাঁতের ক্ষয়ের একটি প্রধান কারণ হচ্ছে বিভিন্ন ড্রিঙ্কস খাওয়া। বাসায় বা খেলাধুলা করার সময় অনেকেই বাচ্চাকে ড্রিঙ্কস খেতে দেন এটা ঠিক নয়। বাচ্চাকে বুঝাতে হবে এবং আস্তে আস্তে খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ এর শেষ বর্ষের ছাত্রী ফারহানা দিলশাদ সুকি জানিয়েছেন যে, ১০ বছর বয়সের নিচের বাচ্চাদের কোল্ড ড্রিঙ্কস খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
৬।স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ানো : স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার ( কলা, ক্রেকার ইত্যাদি) আছে যারা দাঁতের ছিদ্র তৈরি করার ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা রাখে। এই খাবার গুলো আঠাল ও চিনি সমৃদ্ধ । এগুলো খাওয়ার পরে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকে যা ক্যাভেটি সৃষ্টি করে।
৭। ডেন্টিস্ট এর কাছে নিতে দেরি করা : শিশুর প্রথম দাঁত উঠার পরপর বা তাঁর প্রথম জন্মদিনে ডেন্টিস্ট এর কাছে নিয়ে যেতে পারেন। দুধ দাঁতই স্থায়ী দাঁতের জন্য জায়গা তৈরি করে দেয়, তাই দুধ দাঁতের যত্ন নেয়া প্রয়োজন। ৬ মাস পর পর বা বছরে ১ বার আপনার বাচ্চাকে ডেন্টিস্ট এর কাছে নিয়ে যান এবং দাঁতের প্লাক/ ময়লা পরিষ্কার করিয়ে নিন যা ব্রাশ করার মাধ্যমে যায় না।
Share:

No comments:

Post a Comment

Popular Posts

Blog Archive

Powered by Blogger.

Blog Archive

Unordered List

  • Lorem ipsum dolor sit amet, consectetuer adipiscing elit.
  • Aliquam tincidunt mauris eu risus.
  • Vestibulum auctor dapibus neque.

Theme Support

Need our help to upload or customize this blogger template? Contact me with details about the theme customization you need.