বিটের উপকারিতা
নিয়মিত বিটের রস খেলে বাড়ে রক্তে লাল কণিকার সংখ্যা। যা স্ট্যামিনা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই মাংসপেশীতে অক্সিজেনের চলাচল বাড়াতে অ্যাথলেটদের বিটের রস খাওয়ার কথা বলা হয়।# বিট শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতেও সক্ষম। রক্ত থেকে টক্সিক উপাদান বের করতে সাহায্য করায় লিভার ঠিক রাখতেও সাহায্য করে বিট।# মাটির তলার এই সবজির মধ্যে শর্করার উপস্থিতি অনেকটাই বেশি। শর্করার হার বেশি থাকলেও বিটে ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম। তাই বিট খেলেও ক্যালরি বাড়ার সম্ভাবনা নেই। ওজন না বাড়িয়েও শরীরে পুষ্টির যোগান ঠিক রাখতে বিটের বিকল্প নেই।
# শুধু শর্করাই নয় বিট থেকে মেলে লোহা, পোট্যাসিয়াম এবং ম্যাগনাসিয়াম প্রভৃতি খনিজ পদার্থ। মেলে ফাইবারও, যা পাচনতন্ত্রের কাজ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। বিটে থাকা ভিটামিন সি ইম্যুনিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
# বিটে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের পরিমাণও বেশি। বিটের মধ্যে থাকা পলিফেনল নামে অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ক্ষতিকারক কোলেস্টরল কমাতে সাহায্য করে।
# স্ট্রোকের হার কমায় বিট। বিটের নির্যাসে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট থাকার কারণে নাইট্রিক অক্সাইড নামে গ্যাস তৈরি হয়। এই গ্যাস রক্ত কণিকাগুলি প্রসারিত করতে সাহায্য করে। মানব শরীরে রক্ত চলাচল ঠিক রেখে ব্লাড প্রেসার কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনার হৃদয়ের বন্ধু হিসেবে ডায়েটে আজই বিটকে রাখুন।
# লোহা, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, কে এবং সি-তে সমৃদ্ধ বিটের পাতাগুলিও, তাই বিটের কোনও কিছুই যায় না ফেলা।
জেনে নিন বিটের ১২টি গুণাগুণ-
১. রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক করে: বিটে রয়েছে অতিমাত্রায় নাইট্রেটস। মুখে থাকা ব্যক্টেরিয়ার সংস্পর্শে এসে এই নাইট্রেট মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে।২. লিভার ডিটক্সিফাই করে: ফাস্টফুড, স্পাইসিতে অভ্যস্ত জীবনে এমনিতেই লিভারের অবস্থা সঙ্গিন। বিটের জুসে থাকা বেটাইন নামে এক উপাদান কিন্তু লিভার ফাংশান ভালো করে। লিভার থেকে টক্সিন বের করে দেয়।
৩. ঋতুচক্রের সমস্যা দূর করে: সময়ের আগেই মেনোপজের লক্ষণ দেখা দিলে বা ঋতুচক্র সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হলে বিটের জুস খান। বিটে থাকা আয়রণ নতুন লোহিত রক্তকণিকা গঠনে সাহায্য করে। যার ফলে ঋতুচক্রের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৪. ক্যানসারের চিকিত্সায়: বিটের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-টিউমার গুণ। গবেষণায় দেখা গিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত কোষের হাত থেকে সুস্থ কোষগুলোকে বাঁচায়। নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে।
৫. রক্তচাপ কমায়: যাঁরা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, দিনে অন্তত দু-গ্লাস বিটের জুস খান। বিটে থাকা উচ্চ মাত্রার নাইট্রেট রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে: বিট হল হাই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। ফলে শরীর থেকে টক্সিন বের করতেও কাজে দেয়।
৭. কোষ্ঠকাঠিন্যেও বিট: যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, উচিত বেশি করে বিটের জুস খাওয়া। বিপাকের সমস্যা দূর করে হজমশক্তি বাড়ায়। পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়।
৮. রক্তাল্পতা ও আয়রন ঘাটতিতে: বিটে প্রচুর আয়রন থাকে, যা লোহিত রক্তকণিকার জন্য অত্যন্ত জরুরি উপাদান। যে কারণে রক্তাল্পতায় যাঁরা ভুগছেন, বা যাঁদের আয়রনের ঘাটতি রয়েছে, এই শীতে বেশি করে বিট খাওয়া উচিত।
৯. পেশিশক্তি বাড়ায়: মাসল ফোলাতে রোজ জিমে যাচ্ছেন? তা ভালো, সঙ্গে নিয়ম করে বিটের জুস খান। তার কারণ বিট পেশিশক্তি বাড়ায়।
১০. ত্বকে জেল্লা আনে: বিটের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-এজিং ফর্মুলা। ফলে, ত্বক থেকে বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে নিয়ম করে এই শীতে বিট জুস খান। ত্বকের অন্যান্য সমস্যাও দূর করে। জেল্লাও আসে।
১১. ডিপ্রেশন দূর করতে জুড়ি নেই: কোনও কারণে ডিপ্রেশনে ভুগছেন? বিষণ্ণতা আপনাকে গ্রাস করছে? এই শীতে বিট জুসই হতে পারে সেরা প্রাকৃতিক ওষুধ। বিটে ট্রিপ্টোফান ও বিটেইন নামে যে উপাদান থাকে, তা ডিপ্রেশন কাটাতে ভালো কাজ দেয়।
১২. জন্মগত ত্রুটি দূর করে: বিট রুটের মধ্যে রয়েছে ফোলেট ও ফলিক অ্যাসিড। যার কাজ হল জন্মগত ত্রুতি দূর করা। যে কারণে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের বিট জুস খাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা।
No comments:
Post a Comment