থানকুনি পাতার উপকারিতা

থানকুনি পাতার উপকারিতা

আমরা বিভিন্ন আরোগ্য রোগ-বালাই থেকে নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করে থাকি, যার বেশি ভাগই আমাদের ক্ষতির মুখে ঠেলে দেয়। সর্বদা আমরা অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ঔষধ বিভিন্ন রোগ-বালাই যেমন টাইফয়েড, ডায়রিয়া, কলেরা ও বিশেষ করে পেটের রোগ থেকে মুক্তির জন্য গ্রহণ করে থাকি। যা আবার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে খুবই ব্যয়বহুল এবং স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। কিন্তু আপনি জানেন না যে, আপনার চারপাশে এমন কিছু ভেষজ আছে যেগুলো শুধু আপনার ব্যয়ই কমাবে তাই নয়, সাথে সাথে রোগ থেকেও পরিত্রান দিবে আপনাকে। থানকুনি এমনি একটি উপকারী ভেষজ।
চিকিৎসার অঙ্গণে থানকুনি পাতার অবদান অপরিসীম । পক্রিয়াজাতকরনের মাধ্যমে বহু রোগের উপশমই হয় থানকুনির ভেজজ তেল থেকে। খাদ্য উপায়ে থানকুনির সরাসরি গ্রহণ রোগ নিরাময়ে যথার্থ ভুমিকা পালন করে। অঞ্চল ভেদে এর বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। যেমন- থানকুনি, টেয়া , মানকি , তেতুরা, আদামনি, দোলামনি , থুলকুঁড়ি , মানামানি ইত্যাদি। এটি সাধারণত পুকুরের তীরে পাওয়া যায়। ডাক্তাররা বলে, যদি আপনি থানকুনি নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে আপনাকে আর পেটের ব্যথাতে ভুগতে হবে না। আবার এটা শুধুমাত্র ঊষর প্রান্তর তাজা রাখে তাই নয় বরং বুদ্ধি বিকাশেও সাহায্য করে। এটি শৈশব থেকেই খেতে পারেন। তারুণ্য ধরে রাখতে এবং সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে থানকুনি অনেক উপকারী। আসুন থানকুনির আরও কিছু ব্যবহার জেনে নেয়া যাক।
থানকুনির ১৫ টি উপকারিতা
১. পেটের রোগ নিরাময় করতে থানকুনির কোন বিকল্প নেই, আপনার যে কোন পেটের ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আপনি এটি নিয়মিত খেতে পারেন। আপনার পেটের ব্যথার জন্য আর কষ্ট ভোগ করতে হবে না।
২. কেবল পেটের ব্যথা ছাড়াও আলসার এবং বিভিন্ন চর্মরোগ থানকুনি দ্বারা নিরাময় করা সম্ভাব। থানকুনির ব্যবহার আরও বিভিন্নভাবে করা যায়। যেমন- স্কিনের উজ্জলতা এবং নতুন চুল গজাতে এর ব্যবহার বলে শেষ করা যায় না।
৩. থানকুনির Bacoside A এবং Bacoside B উপাদান মস্তিষ্কের কোষের গঠন করতে সাহায্য করে এবং রক্তসংবহন বাড়ায়।
৪. অল্প পরিমান আমগাছের ছাল, আনারসের কচিপাতা ১ টি ,কাচা হলুদের রস, ৪/৫ টি থানকুনি গাছের শিকড়সহ ভাল করে ধুয়ে একত্রে বেটে রস করে খালি পেটে খেলে পেটের পীড়া ভাল হয়। ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি আরও কার্যকর।
৫. স্কিনের মৃতপ্রায় কোষের জন্য থানকুনি অনেক উপকারী। থানকুনির রস মৃতপ্রায় কোষ পুনরায় সংগঠিত করতে পারে। এবং শুষ্ক হওয়া থেকে বাচায়, যারফলে শুষ্ক ত্বক মসৃণ হয়ে যায়।
৬. কোনো পুরাতন ক্ষত নিরাময় না করতে পারলে সেদ্ধ থানকুনি পাতার প্রলেপ দিলে অনেক বেশি উপকার হয়।
৭. থানকুনি চুল পড়া বন্ধ করতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।এই ক্ষেত্রেও থানকুনির গুনাগুন অপরিসীম।
৮. আপনার যদি বয়স বাড়ার ফলে নিজেকে দুর্বল অনুভূত হয়, সেই ক্ষেত্রে থানকুনির রস প্রতিদিন পান করলে তারুণ্য ধরে রাখতে পারবেন। চেহারা সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য দুধ এর সাথে এক গ্লাস থানকুনি পাতার রস পান করতে হবে, যার ফলে আপনার কনফিডেন্স আরো বেড়ে যাবে।
৯. দাঁতের নানান রোগ ভাল করার পেছনে থানকুনি পাতার বিকল্প নেই। রক্তপাত, মাড়ি ও দাঁত ব্যথার ক্ষেত্রেও পাওয়া যাবে সুফল। যদি থানকুনি পাতার রস নিয়ে পানি কুলি করা হয়, দাতের ব্যথা অনেক কমে যাবে। একটি বড় বাটির মধ্যে থানকুনি পাতার প্রলেপ করে দিলে শরীরের ফোঁড়াতে ভাল ফলাফল শীঘ্রই পেতে পারেন।
১০. থানকুনি স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।এছাড়া আধা কেজি দুধে ১ পোয়া মিশ্রি ও আধা পোয়া থানকুনির পাতার রস একত্রে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ১ সপ্তাহ খেলে পেটের গ্যাস্টিক ভাল হয়।
১১. বেগুন/পেপের সাথে থানকুনি পাতা মিশিয়ে শুঁকতা রান্না করে প্রতিদিন ১ মাস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
১২. জর ও আমাশয়ে থানকুনির পাতার রস খেলে উপকার হয়।
১৩. প্রতিদিন খালি পেটে ৪ চামচ থানকুনি পাতার রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে ৭ দিন খেলে রক্ত দূষণ ভাল হয়।
১৪. বাচ্চাদের কথা স্পষ্ট না হলে ১ চামচ থানকুনির পাতার রস গরম করে খাওয়ালে কথা স্পষ্ট হবে।
১৫. প্রতিদিন সকালে থানকুনির রস ১ চামচ ও ৫/৬ ফোঁটা হলুদের রস সামান্য চিনি বা মধুর সাথে খাওয়ালে বাঁচাদের লিভারের সমস্যা সমাধান হয়।
Share:

No comments:

Post a Comment

Popular Posts

Blog Archive

Powered by Blogger.

Blog Archive

Unordered List

  • Lorem ipsum dolor sit amet, consectetuer adipiscing elit.
  • Aliquam tincidunt mauris eu risus.
  • Vestibulum auctor dapibus neque.

Theme Support

Need our help to upload or customize this blogger template? Contact me with details about the theme customization you need.